অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তেহরানে আযারবাইজান দূতাবাসে গত মাসে যে তিক্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে রাজনীতি না করতে বাকুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল (রোববার) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি এক বিবৃতিতে বলেন, “গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় বিষয়টি ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করার ঘটনা কোনভাবেই গঠনমূলক তৎপরতা হতে পারে না এবং এই রকম কর্মকাণ্ড হামলার ঘটনা তদন্তে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বরং যেকোনো ধরনের আগাম বিচার, রাজনীতিকীকরণ এবং ঘটনা অতিরঞ্জিত করা থেকে বিরত থাকা উচিত।”
গত ২৭ জানুয়ারি তেহরানে আযারবাইজানের দূতাবাসে এক বন্দুকধারী আকস্মিকভাবে ঢুকে পড়ে এবং গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ ঘটনায় দূতাবাসের সিকিউরিটি সার্ভিসের প্রধান নিহত এবং দূতাবাসের দুজন প্রহরী আহত হন। পরে হামলাকারীকে ইরানি নাগরিক ইয়াসিন হোসেইনযাদে বলে চিহ্নিত করা হয়। তিনি দাবি করেন, গত বছরের এপ্রিল মাসে তার স্ত্রী আযারবাইজানের দূতাবাসে এসেছেন এবং তারপর থেকে তিনি আর ফিরে যাননি। এতে হোসেইনযাদে হতাশ হয়ে এই হামলা চালিয়েছেন।
হামলার পর তেহরানের পুলিশপ্রধান হোসেইন রাহিমি প্রাথমিক তদন্ত শেষে বলেছিলেন, পারিবারিক সমস্যা থেকেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে আযারবাইজানের প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দাবি করেছেন, এটি একটি সন্ত্রাসী ঘটনা।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানও বলেছেন, দেশের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো মনে করছে যে, এটি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের হামলা নয় বরং ব্যক্তিগত কারণ থেকে এই হামলা সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনা পরিষ্কার করার ব্যাপারে ইরানের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা প্রচেষ্টা চালানো সত্ত্বেও আযারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ দুইদিন পর দূতাবাস খালি করার নির্দেশ দেন। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের অবকাশে শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইরান সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিরা এই হামলায় জড়িত। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি তেহরানের স্বচ্ছ তদন্তের ওপর নির্ভর করছে।
আযারবাইজানের প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি বলেন, ইরানি কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে এবং এ পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে তাতে বন্দুকধারী হামলাকারীর উদ্দেশ্য স্পষ্ট।
নাসের কানয়ানি বলেন, এই ঘটনার সমস্ত দিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ইরান তদন্তের যে ফলাফল পেয়েছে তা আজারবাইজানকে দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান। ইরানি মুখপাত্র বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, সহযোগিতা এবং গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করলে আযারবাইজানের কর্মকর্তাদের মনের অস্পষ্টতা এবং প্রশ্নের জবাব পাবেন।
Leave a Reply